কক্সবাংলা ডটকম :: দ্বিতীয়বারের মতো বিশাল মহাকাশযান স্টারশিপ রকেট উড্ডয়ন করল আমেরিকান উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশযান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান স্পেস-এক্স।
মহাকাশচারীদের চাঁদে এবং তার বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে এ মহাকাশযানটি। তবে স্পেস-এক্সের দ্বিতীয়বারের মতো মহাকাশযানটি উড্ডয়নের মাত্র ৮ মিনিটের মাথায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
শনিবার আমেরিকার টেক্সাসের বোকা চিকার থেকে স্থানীয় সময় সকালে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মহাকাশযানটির উড্ডয়ন করা হয়।
এদিকে, স্টারশিপ মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণের পর তাঁর দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্ক।
দ্বিতীয়বারের এই মহাকাশ উৎক্ষেপণের পরীক্ষাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘৩৩টি র্যাপ্টর ইঞ্জিনের শক্তির অধীনে স্টারশিপ সফলভাবে উত্তোলন করেছে। এমনকি সফলভাবে ইঞ্জিন থেকে পৃথক হয়েছে। এই ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে, আমরা যা শিখি তা থেকে সাফল্য আসবে। আজকের পরীক্ষা আমাদেরকে স্টারশিপের নির্ভরযোগ্যতা উন্নত করতে সাহায্য করবে। স্পেসএক্সের মাধ্যমে জীবনকে বহুমুখী করে তুলতে চাই।’
এদিকে, নাসা প্রধান বিল নেলসন স্পেসএক্স দলকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, “যারা আজকের ফ্লাইট পরীক্ষায় অগ্রগতি করেছে তাদেরকে অভিনন্দন।”
‘স্পেসফ্লাইট হল একটি দুঃসাহসিক কাজ। যা করতে দৃঢ় মনোভাব এবং সাহসী উদ্ভাবন প্রয়োজন। আজকের পরীক্ষা থেকে শেখার সুযোগ রয়েছে। তারপর আবার উৎক্ষেপণ কর।’
.
তিনি বলেন, ‘একসাথে নাসা এবং স্পেসএক্স চাঁদ, মঙ্গল এবং তার বাইরে মহাকাশচারীদের নিয়ে যেতে কাজ করবে।’
এদিকে স্পেসএক্স ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, ‘দ্বিতীয় উৎক্ষেপণের মাধ্যমে এপ্রিলে প্রথম প্রচেষ্টার চেয়ে বেশি সফল হয়েছেন তারা। আজকের পরীক্ষা থেকে সংগৃহীত যেকোন তথ্য ভবিষ্যতের মহাকাশযানের পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।’
স্পেসএক্স ইঞ্জিনিয়াররা বলছেন, এই লঞ্চের পরবর্তী পর্যায়টি হল পুনঃপ্রবেশ, তবে আমরা এটিতে কী ধরনের ছবি দেখতে যাচ্ছি তা স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে মহাকাশযানটির সুপার হেভি বুস্টার বিস্ফোরিত হয়েছে, যা স্পেসএক্স ইঞ্জিনিয়ারদের পরিকল্পনা ছিল না।
তবে ভেঙে পড়লেও স্টারশিপের এই পরীক্ষা একেবারে ব্যর্থ হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। আট মিনিট রকেটটি উড়েছিল। লঞ্চপ্যাড থেকে যাত্রা সফল ছিল। যেটুকু সময় উড়েছে, তাতে ইঞ্জিনিয়াররা বুঝতে পেরেছেন, রকেটটি কীরকম কাজ করেছে, ত্রুটিই বা কোথায় রয়ে গেছে।
রকেটটি দ্বিতীয় ধাপের জন্য উর্ধ্বাকাশে উঠতে থাকে। তবে কয়েক মিনিট পরেই স্পেসএক্স থেকে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রকেটের ওপরের অংশটির সাড়ে আট মিনিট পর্যন্ত ওড়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কিছু আগে বা পরে রকেটের কম্পিউটারের আত্মঘাতী প্রোগ্রাম সক্রিয় হয়। রকেটি বিস্ফোরিত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে পড়েছে।
রকেটটি ধ্বংস করার প্রধান কারণ হলো এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আফ্রিকার ভূমিতে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। ধ্বংস হওয়ার আগে এটি ভূমি থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার ওপরে যে গতিতে উড়ছিল তাতে এর ধ্বংসাবশেষ আফ্রিকায় গিয়ে পড়তে পারতো।
ইলন মাস্কের মহাকাশযান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান স্পেস-এক্স দ্বিতীয়বারের মতো বিশাল মহাকাশযান স্টারশিপ রকেট উড্ডয়ন করল। এরআগে গত এপ্রিলে প্রথম বারের মতো মহাকাশ অভিযানে রকেট উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা চালায় স্পেস-এক্স। প্রথমবার মহাকাশযান উৎক্ষেপণের মাত্র চার মিনিটের মাথায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ফলে সে যাত্রায় ব্যর্থ হয় মহাকাশ অভিযাত্রা।
দ্বিতীয় পরীক্ষামূলক মহাকাশযানটি প্রথমটির চেয়ে অনেক দিক থেকে এগিয়ে। স্টারশিপ রকেটের দুটি অংশ পরিকল্পনা অনুযায়ী আলাদা করা হয়েছে। বৃহদাকার এ মহাকাশযানে ৩৩ টি ইঞ্জিন লাগানো হয়েছে।
শনিবার আমেরিকার টেক্সাস থেকে এখন পর্যন্ত তৈরি করা সবচেয়ে শক্তিশালী রকেটটি দ্বিতীয়বারের মতো উড্ডয়ন করা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে শক্তিশালী রকেটের উৎক্ষেপণের সময় টেক্সাসের স্পেসএক্স কেন্দ্রে উল্লাস করতে দেখা যায় কর্মকর্তাদের।
Posted ২:৩২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta